দ্বিতীয় অধ্যায়: কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা - SMH Amiri

সর্বশেষ লিখা

দ্বিতীয় অধ্যায়: কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা

 প্রশ্ন ॥ ১ ॥ কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণে সফটওয়্যারের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। আর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে মূল যন্ত্র হচ্ছে কম্পিউটার বা প্রসেসর ও সফটওয়্যার নির্ভর যন্ত্র। এসব যন্ত্র নতুন অবস্থায় খুব দ্রুত কাজ করলেও যত দিন যায় ক্রমশ ধীর হয়ে আসে। এমনকি কখনো কখনো এর গতি এতটাই কমে যায় যে যন্ত্রটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণে গুরুত্ব দেওয়া। কম্পিউটার যেহেতু সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত সেহেতু এর রক্ষণাবেক্ষণেও সফটওয়্যারের গুরুত্ব অপরিসীম। কম্পিউটারকে সচল ও গতিশীল রাখার জন্য মাঝে মাঝে রেজিস্ট্রি ক্লিনআপ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হয়। এছাড়া প্রত্যেকবার কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় বেশ কিছু টেম্পোরারি ফাইল তৈরি হয়। অনেকদিন এই ফাইলগুলো না মুছে দিলে হার্ডডিস্কের অনেকটা জায়গা দখল করে রাখে এবং কম্পিউটারের গতিকে ধীর করে দেয়। এ কারণে সফটওয়্যারের সাহায্য নিয়ে মাঝে মাঝে এ ফাইলগুলো মুছে দিতে হয়। যারা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের ইন্টারনেট ব্রাউজারের ক্যাশ মেমোরিতে অনেক কুকিজ ও টেম্পোরারি ফাইল জমা হয়। এতে আইসিটি যন্ত্রটি ক্রমান্বয়ে ধীর হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন সম্ভব না হলেও কিছুদিন পর পর সফটওয়্যারের সাহায্য নিয়ে ক্যাশ মেমোরি পরিষ্কার করা একান্ত অপরিহার্য। বর্তমানে এন্টি ভাইরাস, এন্টি ম্যালওয়্যার ও এন্টি স্পাইওয়্যার ছাড়া আইসিটি ডিভাইস ব্যবহার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তবে এসব সফটওয়্যার এখন ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া কম্পিউটারের কাজের গতি ঠিক রাখার জন্য অনেক ব্যবহারকারী ডিস্ক ক্লিন আপ ও ডিস্ক ডিফ্র্যাগমেন্টার ব্যবহার করে। এই সফটওয়্যার দুটি হার্ডডিস্কের জায়গা খালি করে এবং ফাইলগুলো এমনভাবে সাজায় যাতে কম্পিউটার গতি বজায় রেখে কাজ করতে পারে।

প্রশ্ন ॥ ২ ॥ সফটওয়্যার ইনস্টল করার পূর্বে কোন বিষয়গুলো লক্ষ করা প্রয়োজন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আইসিটি যন্ত্রগুলো সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তাই কোনো আইসিটি যন্ত্রকে ব্যবহার উপযোগী করে তোলার জন্য তাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হয়। আমরা যখন কোনো আইসিটি যন্ত্র ক্রয় করি তখন বিক্রেতা আমাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ দ্বারা যন্ত্রে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করে দেয়। এ কারণেই আমরা নিজেদের প্রয়োজনমতো আইসিটি যন্ত্রগুলো ব্যবহার করতে পারি। তবে যন্ত্রটি কেনার পর আমরা নিজেরাও তাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করতে পারি। আইসিটি যন্ত্র তথা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোনে কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করার পূর্বে আমাদের নিম্নোক্ত দিকগুলো লক্ষ রাখা প্রয়োজন :

·        যে সফটওয়্যার ইনস্টল করা হবে তা যন্ত্রের হার্ডওয়্যার সাপোর্ট করে কিনা;

·        read me ফাইলটিতে জরুরি কিছু কাজের কথা লেখা থাকে। তাই এ ফাইলটি পড়ে নিতে হবে।

·        ইনস্টলেশনের সময় অন্য সকল কাজ বন্ধ আছে কিনা।

·        এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার বন্ধ আছে কিনা।

·        অপারেটিং সিস্টেমের এডমিনিস্ট্রেটরের অনুমতি আছে কিনা।

প্রশ্ন ॥ ৩ ॥ সফটওয়্যার ইনস্টলেশনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে লেখ।

উত্তর : আইসিটি যন্ত্রগুলো সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এ সফটওয়্যারগুলো কম্পিউটার বা অন্যান্য যন্ত্রে ইনস্টল করতে হয়। সাধারণত আইসিটি যন্ত্রগুলো ক্রয় করার সময় বিক্রেতা ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী একজন বিশেষজ্ঞ দ্বারা তাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করে দেয়। তবে ব্যবহারকারী চাইলে আইসিটি যন্ত্র কেনার পরও তাতে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করতে পারে। অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার ইনস্টল করার প্রক্রিয়া একটু জটিল এবং এর জন্য কিছু বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয়। অপারেটিং সিস্টেম ছাড়াও আইসিটি যন্ত্রে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার প্রয়োজন হয়। এসব সফটওয়্যার ইনস্টল করার প্রক্রিয়া অনেকটাই অপারেটিং সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে। তবে এ প্রক্রিয়া অনেকটা একই ধরনের। কোনো সফটওয়্যার ইনস্টল করতে হলে প্রথমেই আমাদের সফটওয়্যারটির সফট বা ডিজিটাল কপি প্রয়োজন হবে। এ সফট কপিটি সিডি, ডিভিডি, পেনড্রাইভ বা ইন্টারনেট থেকে পাওয়া যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সফটওয়্যারগুলোর সাথে Auto run নামে একটি প্রোগ্রাম সংযুক্ত অবস্থায় থাকে। কম্পিউটারে সিডি, ডিভিডি বা পেনড্রাইভ প্রবেশ করালে Auto run প্রোগ্রামটি সচল হয়ে যায় এবং সফটওয়্যারটি setup করার অনুমতি চায়। অনুমতি প্রদান করার পর পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করলেই সফটওয়্যারটি যন্ত্রে ইনস্টল হয়ে যায়। সাধারণত যন্ত্রটি restart করলেই ইনস্টলকৃত প্রোগ্রামটি ব্যবহার করা শুরু করা যায়।

প্রশ্ন ॥ ৪ ॥ সফটওয়্যার আনইনস্টলেশন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আইসিটি যন্ত্রগুলো সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই আমরা এই ধরনের যন্ত্রগুলো নিজের প্রয়োজনমতো ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ইনস্টল করে নিই। এসব সফটওয়্যারের কোনো কোনোটির প্রয়োজন আমাদের কাছে অনেক সময় ফুরিয়ে যায়। কিন্তু তারপরও আমরা এ সফটওয়্যারগুলো আমাদের যন্ত্রে রেখে দেই। এতে হার্ডডিস্কের জায়গা নষ্ট হয়। ফলে যন্ত্রগুলোর গতি কমে আসে। আবার অনেক সময় আইসিটি যন্ত্রটির পরিচালনায়ও ঝামেলা সৃষ্টি হয়। তাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হলো আইসিটি যন্ত্র থেকে অপ্রয়োজনীয় সফটওয়্যারগুলো ইনস্টল করে ফেলা। এ কাজটি করতে অপারেটিং সিস্টেম আমাদের সাহায্য করে। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমের কাজের ধরন একই। তবে এন্ড্রয়েড চালিত যন্ত্র বিশেষ করে হাতের আঙুলের স্পর্শ দ্বারা পরিচালিত অর্থাৎ টাচস্ক্রিনযুক্ত স্মার্টফোনগুলো থেকে সফটওয়্যার আনইনস্টল করা খুবই সহজ। সেটিংস থেকে অ্যাপ্লিকেশন সিলেক্ট করে নির্দিষ্ট সফটওয়্যারটিতে টাচ করলে পর্দায় একটি মেনু আসে। সেখানে আনইনস্টল লেখা জায়গায় টাচ করার পর সফটওয়্যারটি আনইনস্টল হয়ে যায়। বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ মাইক্রোসফট উইনডোজের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে। এই অপারেটিং সিস্টেম চালিত যন্ত্র হতে কোনো সফটওয়্যার আনইনস্টল করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে হয় :

·        প্রথমে স্টার্ট বাটন থেকে কন্ট্রোল প্যানেলে যেতে হয়। এরপর ডাবল ক্লিক করে ‘অ্যাড অর রিমুভ’ অথবা ‘আনইনস্টল প্রোগ্রাম’ এ ঢুকতে হয়।

·        যে ফাইলটি আনইনস্টল করতে হবে সেটি খুঁজে ক্লিক করে আনইনস্টলে ক্লিক করলেই ফাইলটি আনইনস্টল হতে শুরু করে।

·        আনইনস্টল করার পর সাধারণত কম্পিউটার রিস্টার্ট করতে হয়।

          তবে কোনো সফটওয়্যার আনইনস্টল করার সময় নিশ্চিত হয়ে তা করতে হয়। অন্যথায় ভুলক্রমে এমন সফটওয়্যার আনইনস্টল হতে পারে, যার কারণে যন্ত্রটিতে পুনরায় সফটওয়্যারটি ইনস্টল করা ছাড়া চালানো সম্ভব নাও হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে হয়।

প্রশ্ন ॥ ৫ ॥ কম্পিউটার থেকে সফটওয়্যার ডিলিট করার প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।

উত্তর : ডিলিট অর্থ মুছে ফেলা। মূলত সফটওয়্যার আনইনস্টল করার মাধ্যমে আইসিটি যন্ত্র হতে কোনো সফটওয়্যার মুছে ফেলা যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে আনইনস্টল করা সফটওয়্যারটির কিছু অংশ অপারেটিং সিস্টেমের রেজিস্ট্রি ফাইলে থেকে যায়। এ কারণে আইসিটি যন্ত্র থেকে কোনো সফটওয়্যার আনইনস্টল করার পর সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে তাকে ডিলিট করতে হয়। এতে আইসিটি যন্ত্র থেকে সফটওয়্যারটি সম্পূর্ণভাবে মুছে যায়।

কম্পিউটার থেকে সফটওয়্যার ডিলিট করার ধাপসমূহ নিচে বর্ণনা করা হলো :

১. প্রথমে কীবোর্ডের start বাটন +r একসাথে চেপে Run command চালু করতে হবে। তারপর regedit লিখে এন্টার নিতে হবে।

২. ফাইল মেনুতে প্রবেশ করতে হবে।

৩. Export এ ক্লিক করতে হবে।

৪. অপারেটিং সফটওয়্যার যে ড্রাইভে রয়েছে অর্থাৎ C সিলেক্ট করতে হবে।

৫. নাম দিয়ে ফাইলটি সেভ করতে হবে। এটি খুবই জরুরি। কোনো ভুল হলে যাতে সিস্টেম ঠিক করা যায়।

৬. অতঃপর Edit  প্রবেশ করতে হবে।

৭. Find এ যেতে হবে।

৮. যে সফটওয়্যারটি ডিলিট করতে চাই তার নাম খুঁজতে হবে। যেমন- AUDIALS

৯. এরপর আরও অন্য ফাইলে ডিলিট করতে চাইলে Find Next এ ক্লিক করতে হবে।

১০. সফটওয়্যার সিলেক্ট করতে হবে।

১১. এবার ডান বাটন ক্লিক করে Delete এ ক্লিক করতে হবে।

১২. সবশেষে কীবোর্ডের F3 চেপে রেজিস্ট্রির সব জায়গা থেকে ঐ নামের ফাইলগুলো মুছে দিতে হবে। এভাবে সম্পূর্ণ হবে পুরো সফটওয়্যার ডিলিট করার প্রক্রিয়া।

প্রশ্ন ॥ ৬ ॥ ভাইরাস কী? এটি কীভাবে কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রে ছড়িয়ে পড়ে?

উত্তর : ভাইরাস : ভাইরাস হলো এক ধরনের সফটওয়্যার যা তথ্য ও উপাত্তকে আক্রমণ করে যার নিজের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে। ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করলে সাধারণত সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকে ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তকে আক্রমণ করে এবং এক পর্যায়ে গোটা কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রকে সংক্রমিত করে অচল করে দেয়।

ভাইরাস ছড়ানোর পদ্ধতি : সিডি, পেনড্রাইভ কিংবা অন্য যেকোনোভাবে ভাইরাসযুক্ত একটি ফাইল ভাইরাসমুক্ত একটি কম্পিউটার বা কোনো আইসিটি যন্ত্রে চালালে ফাইলের সংক্রমিত ভাইরাস কম্পিউটার বা যন্ত্রটির মেমোরিতে অবস্থান নেয়। কাজ শেষ করে ফাইল বন্ধ করলেও সংক্রমিত ভাইরাসটি মেমোরিতে রয়ে যায়। ফলে ভাইরাসমুক্ত কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্র ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। একই অবস্থা ঘটে কোনো ভাইরাস সংক্রমিত প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার চালালেও।

এভাবে মেমোরিতে স্থান দখলকারী ভাইরাস পরবর্তীতে অন্যান্য প্রোগ্রাম এবং ফাইলকেও আক্রমণ করে। কোনো কোনো ভাইরাস তাৎক্ষণিকভাবে সকল প্রোগ্রাম ও ফাইলকে গ্রাস করে, আবার কোনো কোনো ভাইরাস শুধু নতুন প্রোগ্রাম ও ফাইলকেই আক্রান্ত করে। ফাইল ও প্রোগ্রামসমূহ গ্রাস করতে করতে ভাইরাস তার ইচ্ছামতো কম্পিউটারের অভ্যন্তরে সার্বিক ক্ষতি সাধন শুরু করে। এভাবে একটি ভাইরাসমুক্ত কম্পিউটার ধীরে ধীরে ভাইরাসে সংক্রমিত হয় এবং উক্ত সংক্রমিত কম্পিউটারে ব্যবহৃত সিডি, হার্ডডিস্ক, ইন্টারনেট ইত্যাদির মাধ্যমে ভাইরাসটি অন্যান্য কম্পিউটারে ছড়িয়ে পড়ে।

প্রশ্ন ॥ ৭ ॥ কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসহ ভাইরাস কম্পিউটারের কী কী ক্ষতি করতে পারে লেখ।

উত্তর : ভাইরাস হলো এক ধরনের সফটওয়্যার যা তথ্য ও উপাত্তকে আক্রমণ করে এবং যার নিজের সংখ্যা বৃদ্ধির ক্ষমতা রয়েছে। ভাইরাস কম্পিউটারে প্রবেশ করলে সাধারণত সংখ্যা বৃদ্ধি হতে থাকে ও বিভিন্ন তথ্য- উপাত্তকে আক্রমণ করে। ফলে কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দেয়। তখন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। অন্যথায় ভাইরাস এক পর্যায় গিয়ে গোটা কম্পিউটারকে আক্রমণ করে অচল করে দেয়। কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ এবং ভাইরাস কম্পিউটারের যেসব ক্ষতি করে তা নিচে বর্ণনা করা হলো:

কম্পিউটার ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণসমূহ :

·        প্রোগ্রাম ও ফাইল Open করতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি সময় লাগা।

·        মেমোরি কম দেখানো এবং এ কারণে গতি কমে যাওয়া।

·        কম্পিউটার চালু অবস্থায় চলমান কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কিছু অপ্রত্যাশিত বার্তা প্রদর্শিত করা।

·        নতুন প্রোগ্রাম ইনস্টলের ক্ষেত্রে বেশি সময় লাগা।

·        চলমান কাজের ফাইলগুলোর বেশি জায়গা দখল করা।

·        যন্ত্র চালু করার সময় চালু হতে হতে বন্ধ বা শাট ডাউন হয়ে যাওয়া কিংবা কাজ করতে করতে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া।

·        ফোল্ডারে বিদ্যমান ফাইলগুলোর নাম পরিবর্তন হয়ে পড়া যায় না এমন নাম ধারণ করা।

 

ভাইরাস কম্পিউটারের যেসব ক্ষতি করতে পারে :

·        কম্পিউটারে সংরক্ষিত কোনো ফাইল মুছে দিতে পারে।

·        ডেটা বিকৃত বা Corrupt করে দিতে পারে।

·        কম্পিউটারে কাজ করার সময় আচমকা অবাঞ্ছিত বার্তা প্রদর্শন করতে পারে।

·        কম্পিউটার মনিটরের ডিসপ্লেকে বিকৃত বা Corrupt করে দিতে পারে।

·        সিস্টেমের কাজ ধীরগতিসম্পন্ন করে দিতে পারে।

প্রশ্ন ॥ ৮ ॥ এন্টিভাইরাস কী? এটি কীভাবে কাজ করে?

উত্তর : এন্টিভাইরাস : এন্টিভাইরাস হলো ভাইরাসের প্রতিষেধক। এটি কম্পিউটারসহ বিভিন্ন আইসিটি যন্ত্রকে ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

এন্টিভাইরাসের কার্যপদ্ধতি : ভাইরাস বিভিন্নভাবে কম্পিউটার ও অন্যান্য আইসিটিকে আক্রমণ করে এর ক্ষতি সাধন করে। কখনো কখনো এই ক্ষতির পরিমাণ এমন হয় যে যন্ত্রটি পুরোপুরি অচল হয়ে পড়ে। তাই কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্র ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে সাথে সাথে তা নির্মূল করতে হয়। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে এন্টিভাইরাস ইউটিলিটি ব্যবহার করা হয়। এই ইউটিলিটিগুলো প্রথমে আক্রান্ত কম্পিউটারে ভাইরাসের চিেহ্নর সাথে পরিচিত ভাইরাসের চি‎‎হ্নগুলোর মিলকরণ করে। অতঃপর এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি তার পূর্বজ্ঞান ব্যবহার করে সংক্রমিত অবস্থান থেকে আসল প্রোগ্রামকে ঠিক করে। একটি ভালো এন্টিভাইরাস সাধারণভাবে কয়েকশ ধরনের ভাইরাস নির্মূল করতে পারে। নতুন ভাইরাস আবিষ্কৃত হওয়ার সাথে সাথে এন্টিভাইরাস টঢ়ফধঃব করলে এর শক্তি ও কার্যক্ষমতা প্রতিনিয়ত উন্নত হয়। ফলে নতুন নতুন ভাইরাস ধ্বংস করতে পারে। বর্তমানে অনেক এন্টিভাইরাস রয়েছে যেগুলো ভাইরাস চিিহ্নত করে, নির্মূল করে এবং প্রতিহত করে। আজকাল প্রায় প্রত্যেক অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যারের সাথে সংযুক্ত অবস্থায় এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার দেওয়া থাকে। এছাড়াও এখনকার এন্টিভাইরাসগুলো ভাইরাস আক্রমণ করার পূর্বেই তা ধ্বংস করে অথবা ব্যবহারকারীকে সতর্ক করে। ফলে এগুলো পূর্বের এন্টিভাইরাসের তুলনায় অনেক বেশি কার্যকর।

প্রশ্ন ॥ ৯ ॥ কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রগুলো কীভাবে ভাইরাসমুক্ত রেখে ব্যবহার করা যায়? ব্যখ্যা কর।

উত্তর : কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রগুলো বিভিন্নভাবে ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। সেক্ষেত্রে যন্ত্রগুলো বিশেষ করে যন্ত্রগুলোতে ইনস্টল করা সফটওয়্যারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে কারণে যন্ত্রগুলোর গতি কমে যায়। এমনকি যন্ত্রগুলো কখনো কখনো তাদের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি হারিয়ে ফেলে। তাই কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের ব্যবহারকারীদের যন্ত্রগুলোকে ভাইরাস রাখার জন্য সচেষ্ট হতে হয়। নিচে কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রগুলোকে ভাইরাসমুক্ত রেখে ব্যবহার করার পদ্ধতিসমূহ ব্যাখ্যা করা হলো :

১. অন্য যন্ত্রে ব্যবহৃত সিডি, ডিস্ক ইত্যাদি নিজের যন্ত্রে ব্যবহারের পূর্বে ভাইরাস মুক্ত করে নেয়া।

২. অন্য কম্পিউটার থেকে কপিকৃত সফটওয়্যার নিজের কম্পিউটারে ব্যবহারের আগে সফ্টওয়্যারটিকে ভাইরাস মুক্ত করা।

৩. অন্য যন্ত্রের কোনো ফাইল নিজের যন্ত্রে ব্যবহারের পূর্বে ফাইলটিকে ভাইরাস মুক্ত করা।

৪. ইন্টারনেট থেকে কোনো সফটওয়্যার নিজের কম্পিউটারে ডাউনলোড করে ইনস্টল করার সময়ে সতর্ক থাকা। কারণ, ডাউনলোডকৃত সফটওয়্যারে ভাইরাস থাকলে তা থেকে তোমার কম্পিউটারটিও ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে।

৫. অন্যান্য কম্পিউটারে বা যন্ত্রে ব্যবহৃত সফটওয়্যার কপি করে ব্যবহার না করা।

৬. কম্পিউটারে সর্বদা এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার টঢ়ফধঃব করে রাখা, যাতে সতর্ক থাকা সত্ত্বেও যদি কম্পিউটারে ভাইরাস প্রবেশ করে তাহলে সতর্কতামূলক বার্তা প্রদর্শন করে। ফলে নিয়ম অনুযায়ী ভাইরাস ক্লিন করা যাবে।

৭. প্রতিদিনের ব্যবহৃত তথ্য বা ফাইলসমূহ আলাদা কোনো ডিস্ক বা পেনড্রাইভে ব্যাকআপ রাখা, তবে এক্ষেত্রে ডিস্ক বা পেনড্রাইভটি অবশ্যই ভাইরাসমুক্ত হতে হবে।

৮. ই-মেইল আদান-প্রদানে সতর্কতা অবলম্বন করা। যেমন: সন্দেহজনক সোর্স থেকে আগত ই-মেইল ড়ঢ়বহ না করা। করলেও ভাইরাসমুক্ত করে তা খোলা উচিত।

৯. গেম ফাইল ব্যবহারে অতিরিক্ত সতর্ক থাকা। গেম ফাইল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ভাইরাস চেক করতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ১০ ॥ পাসওয়ার্ড কী? পাসওয়ার্ডের গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : পাসওয়ার্ড : আইসিটির এ যুগে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, উপাত্ত ও সফটওয়্যার নিরাপত্তায় এক ধরনের তালা দিতে হয়। এ তালার নাম পাসওয়ার্ড।

পাসওয়ার্ডের গুরুত্ব : বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। তাই এই প্রযুক্তির ব্যবহার এখন সবখানে। শুধু তাই নয় দিন যত যাচ্ছে এর ব্যবহারও তত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এর প্রসার যত বাড়ছে তথ্য ও উপাত্তের নিরাপত্তার প্রশ্নটি তত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আমাদের ব্যক্তিগত সকল তথ্য যেমন : ব্যাংক একাউন্ট, আয়করের হিসাব, চাকরির বিভিন্ন তথ্য ইত্যাদি ছাড়াও নানা তথ্য-উপাত্ত এখন ডিজিটাল ব্যবস্থার আওতায় আসছে। এছাড়াও আমাদের আইসিটি যন্ত্রপাতি যেমন : কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট কিংবা মোবাইল ফোনগুলো সফটওয়্যার দ্বারা পরিচালিত হয়। আমরা যখন ইন্টারনেট ব্যবহার করি তখন পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারি। তেমনি অন্য যে কেউ আমাদের যন্ত্রের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে। এর মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্যও অন্যের কাছে চলে যেতে পারে কিংবা কেউ আমাদের যন্ত্রের সফটওয়্যারের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে আমাদের নিরাপত্তা প্রয়োজন। এসব তথ্য ও আমাদের যন্ত্রের সফটওয়্যারসমূহ রক্ষা করতে পাসওয়ার্ডের কোনো বিকল্প নেই। পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকলে যে কেউ ইচ্ছা হলেই আমাদের তথ্য নিতে পারবে না বা ক্ষতি করতে পারবে না। তবে যদি কেউ বুদ্ধি খাটিয়ে আমরা যে পাসওয়ার্ড দিয়েছিলাম তা ধরে ফেলতে পারে তাহলে সে আমাদের সকল তথ্য নিয়ে নিতে পারবে। তথ্য নষ্ট করতে চাইলে নষ্ট করতে পারবে। অনেকটা ডুপ্লিকেট চাবি বানিয়ে তালা খুলে ফেলার মতো। তাই পাসওয়ার্ড তৈরি করতে আমাদের অনেক দক্ষ হতে হবে। অন্য কেউ ধারণা করতে পারে এমন সহজ পাসওয়ার্ড যেমন তৈরি করা যাবে না আবার নিজেই ভুলে যেতে পারি এমন পাসওয়ার্ড তৈরি করা যাবে না। অর্থাৎ পাসওয়ার্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে আমাদের সৃজনশীল হতে হবে। পাসওয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের সৃজনশীলতাই পারে আমাদের তথ্য, উপাত্ত ও সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে।

প্রশ্ন ॥ ১১ ॥ মৌলিক পাসওয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হয়?

উত্তর : আইসিটির এ যুগে তথ্য, উপাত্ত ও সফটওয়্যারের নিরাপত্তায় পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়। এই পাসওয়ার্ড মৌলিক হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা পাসওয়ার্ড যদি দুর্বল হয় তাহলে তথ্য-উপাত্ত চুরি যাওয়ার, নষ্ট হওয়ার, ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাসওয়ার্ড তৈরির সৃজনশীলতাই আমাদের তথ্য, উপাত্ত ও সফটওয়্যারের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করতে পারে। তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত মৌলিক পাসওয়ার্ড তৈরি ও ব্যবহার করা। নিচে মৌলিক পাসওয়ার্ড তৈরির ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে তা উল্লেখ করা হলো :

·        নিজের বা পরিবারের কারও নাম বা ব্যক্তিগত কোনো তথ্য সরাসরি ব্যবহার না করা। যদিও পাসওয়ার্ডটি মনে রাখার ক্ষেত্রে এটি আমাদের সাহায্য করে থাকে।

·        সংখ্যা, চি‎‎হ্ন ও শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ছোট হাতের অক্ষর ও বড় হাতের অক্ষর মিশিয়ে দিলে ভালো হয়। এতে পাসওয়ার্ডটি সম্পর্কে অন্যের ধারণা করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।

·        পাসওয়ার্ডটি যেন অবশ্যই একটু বড় আকারের হয়।

·        পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য আইসিটি যন্ত্র বা ডায়েরি বা অন্যা কোথাও পাসওয়ার্ড বা এর অংশবিশেষ লিখে না রাখা।

·        পাসওয়ার্ড মনে রাখার জন্য নিজের পছন্দের একটি সংকেত ব্যবহার করা। এটি হতে পারে প্রিয় কবিতা, গল্প, লেখক, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার বা কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা।

প্রশ্ন ॥ ১২ ॥ সাধারণ ও ই-মেইল সাইটে কী ধরনের সতর্কতা মেনে চলা দরকার? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বর্তমানে ব্যবহারকারীদের অনেকেই ইয়াহু, হটমেইল, জিমেইলের মতো সাধারণ ও বিনামূল্যের ই-মেইল সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এগুলোর প্রতিটি সাইটে একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। হ্যাক হলে আমাদের অনেক প্রয়োজনীয় ই-মেইল হারিয়ে যেতে পারে। আবার ঐ একাউন্ট ব্যবহার করে প্রতারণা বা অনুরূপ কাজ হতে পারে, যার দায়দায়িত্ব ব্যবহারকারীর ওপর বর্তায়। তাই সাধারণ ও ই-মেইল সাইটে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত সাধারণ সতর্কতা মেনে চলা দরকার :

·        সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা। ব্যবহারকারীদের অনেকেই নিজের নাম বা এরূপ কোনো সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন, যা মোটেও সংগত নয়। এরূপ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অক্ষর, সংখ্যা, চি‎‎‎হ্ন ইত্যাদি ব্যবহার করে জটিল পাসওয়ার্ড তৈরি করা উচিত।

·        কিছুদিন পর পর ই-মেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা প্রয়োজন।

·        যেসব ক্ষেত্রে দ্বিমুখী ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা। যেমন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জিমেইল একাউন্টের নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করা যায়। এজন্য জিমেইলের দু-ওয়ে ভেরিফিকেশন অপশনটি ব্যবহার করতে হয়।

·        সাইবার ক্যাফে বা অনেকেই ব্যবহার করে এমন কোনো কম্পিউটার থেকে ই-মেইল ব্যবহার করলে, ব্যবহার শেষে অবশ্যই একাউন্ট লগ-আউট করতে হয়।

          এছাড়া সাধারণ ওয়েবসাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কিছু বাড়তি সতর্কতা মেনে চললে নিরাপদ থাকা যায়। অনেক ওয়েবসাইটে বিশেষ ধরনের প্রোগ্রাম ইনস্টল করা থাকে। ওয়েব ব্রাউজারে কুকিজ চালু থাকলে এসব সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ও ব্রাউজারের বিভিন্ন তথ্য অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়। এসব ওয়েবসাইট ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কোনো কোনো ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য চায়। বিশেষ প্রয়োজন না থাকলে এসব তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন ॥ ১৩ ॥ সামাজিক যোগাযোগ সাইটে কী ধরনের সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বর্তমানে অনেকে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য রেখে দেন। ব্যক্তিগত ছবিও অনেকে শেয়ার করে থাকে। তাই ফেসবুক অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড কেউ জেনে ফেললে তাতে ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। এ কারণে সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারের সময় নিম্নোক্ত সতর্কতা মেনে চলা প্রয়োজন :

·        কাউকে ‘বন্ধু’ বানানোর আগে তার সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া, বাস্তব জীবনে যে বন্ধু হওয়ার যোগ্য নয়, সামাজিক যোগাযোগ সাইটেও তাকে বন্ধু বানানো যাবে না।

·        ভার্চুয়াল বা বিদেশে অবস্থানকারীদের বন্ধু বানানোর সময় তার পরিচয় সম্পর্কে সম্যকভাবে নিশ্চিত হওয়া, এজন্য তার প্রোফাইল দেখা, পারস্পরিক বন্ধুদের মধ্যে কেউ পরিচিত কিনা সেসব বিষয় দেখে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন।

·        খুবই ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকা।

·        মোবাইলে ফেসবুক/ই-মেইল ব্যবহার করার পর, প্রতিবারই লগআউট করা।

·        স্কুল, সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহার করার পর সাইন আউট করা।

·        বন্ধুর বা পরিচিত কারও ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ব্যবহারের সময় সতর্ক থাকা।

·        কোনো অপরিচিত ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের অনুরোধ এলে, নিশ্চিত না হয়ে তাতে ক্লিক না করা।

প্রশ্ন ॥ ১৪ ॥ কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে আসক্তি বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : আসক্তি একটা ভীতিকর শব্দ। এই শব্দটা সাধারণত মাদকের সাথে ব্যবহার করা হয়। কোনো একজন ব্যক্তি মাদকে আসক্ত হয়ে গেলে তার জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়। সে চাইলেও তার জন্য সেখান থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন হয়ে যায়।  আইসিটির এ যুগে ভয়ঙ্কর নেতিবাচক এই শব্দটা ধীরে ধীরে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সাথে যুক্ত হয়ে গেছে। কারণ, আমাদের মধ্যে এমন অনেকেই আছেন যাদের কম্পিউটার আছে এবং তারা কম্পিউটার গেম খেলার সময় একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলেন। খেলা বন্ধ করে যখন তাদের অন্য একটা কাজ করা দরকার তখনও তারা খেলা ছেড়ে উঠতে পারে না। আবার আমাদের মধ্যে এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যাদের কম্পিউটারে ইন্টারনেট সংযোগ আছে এবং তাদের ফেসবুক একাউন্ট আছে। তারা অনেক সময় ফেসবুকে কোনো একটা তথ্য দিয়ে গভীর আগ্রহে বসে থাকে এ জন্য যে কেউ তাতে লাইক দিবে। যখন কেউ লাইক দেয় তারা আনন্দ পায় এবং কম্পিউটার গেমের মতো এর পেছনে অধিক সময় ব্যয় করে। অথচ আমাদের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত মুল্যবান। তাই তারা যদি ফেসবুকে বসে সময় নষ্ট না করে সত্যিকার ভালো কোনো কাজে সময় ব্যয় করত তাহলে তা তার জন্য যেমন ভালো কিছু হতো তেমনি ভালো হতো তার পরিবার, সমাজ ও জাতির জন্য। এভাবে তারা কম্পিউটার গেম কিংবা ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সময় দিয়ে জীবনের খানিকটা হলেও ক্ষতি করছে। আর এ কারণেই কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের মতো চমৎকার সব বিষয়ের সাথে আসক্তি শব্দটা যুক্ত হয়ে গেছে। আসক্তি বলতে বোঝানো হয় যখন কেউ জানে কাজটি করা ঠিক হচ্ছে না তারপরও সেই কাজটি না করে থাকতে পারে না। মাদকের জন্য এটি যেমন হতে পারে ঠিক সে রকম কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের ক্ষেত্রেও হতে পারে। মাদক যে রকম জীবনের জন্য ক্ষতিকর, বাড়াবাড়ি করা হলে কম্পিউটার কিংবা ইন্টারনেটও সে রকম ক্ষতির কারণ হতে পারে।

প্রশ্ন ॥ ১৫ ॥ কম্পিউটার গেমে আসক্তির বিষয়টি ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কম্পিউটার গেমে আসক্তিটা প্রায় সময়েই শুরু হয় শৈশব থেকে এবং বেশিরভাগ সময়ই সেটা ঘটে অভিভাবকদের অজ্ঞতার কারণে। কম্পিউটার একটা Tool এবং এটা দিয়ে নানা ধরনের কাজ করা যেতে পারে। এই প্রযুক্তি সম্পর্কে এত সুন্দর সুন্দর কথা বলা হয়েছে যে অনেক সময়ই অভিভাবকরা ধরে নেন এটা দিয়ে যা কিছু করা হয় সেটাই বুঝি ভালো, তাই যখন তারা দেখেন তাদের সন্তানেরা দীর্ঘ সময় কম্পিউটারের সামনে বসে আছে তারা বুঝতে পারেন না তার মাঝে সতর্ক হওয়ার ব্যাপার রয়েছে। কম্পিউটার গেম এক ধরনের বিনোদন এবং এই বিনোদনের নানা রকম মাত্রা রয়েছে। যারা সেটি খেলছে তারা সেটাকে নিছক বিনোদন হিসেবে নিয়ে মাত্রার ভেতরে ব্যবহার করলে সেটি যেকোনো সুস্থ বিনোদনের মতোই হতে পারে। কিন্তু প্রায় সময়ই সেটি ঘটে না। কোরিয়ায় একজন মানুষ টানা পঞ্চাশ ঘণ্টা কম্পিউটার গেম খেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল। কাজেই এ বিষয়ে সবার সতর্ক হওয়া জরুরি।

এক গবেষণায় দেখা গেছে কোনো একটা কম্পিউটার গেমে তীব্রভাবে আসক্ত একজন মানুষের মস্তিষ্কে বিশেষ উত্তেজক রাসায়নিক দ্রব্যের আবির্ভাব হয়। শুধু তাই নয় যারা সপ্তাহে অন্তত ছয় দিন টানা দশ ঘণ্টা করে কম্পিউটার ব্যবহার করে তাদের মস্তিষ্কের গঠনেও এক ধরনের পরিবর্তন হয়ে যায়। কাজেই কম্পিউটার গেম চমৎকার একটা বিনোদন হতে পারে- কিন্তু এতে আসক্ত হওয়া খুব সহজ এবং তার পরিণতি মোটেও ভালো নয়, সেটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ১৬ ॥ কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যাওয়ার লক্ষণসমূহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কম্পিউটার এক ধরনের প্রযুক্তি। তাই অনেকেই কম্পিউটার ব্যবহার করে করা যেকোনো কাজকেই প্রযুক্তির এক ধরনের ব্যবহার বলে মনে করে, যেটা মোটেও সত্যি নয়। যারা কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যায়, তাদের কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে। লক্ষণগুলো হলো :

·        তাদের মাথায় সবসময় শুধুমাত্র সেই গেমটার ভাবনাই খেলা করে।

·        যখনই তারা গেমটি খেলতে বসে তাদের ভেতরে এক ধরনের অস্বাভাবিক উত্তেজনা ভর করে।

·        যারা গেম খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে তাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটতে থাকে।

·        কম্পিউটার গেমসে আসক্তকারীরা লেখাপড়ায় তাদের আগ্রহ হারিয়ে অমনোযোগী হয়ে ওঠে।

·        কম্পিউটার গেমে আসক্ত ব্যক্তিদের গেম খেলা থেকে বিরত রাখা হলে তাদের শারীরিক অস্বস্তি হতে থাকে।

প্রশ্ন ॥ ১৭ ॥ সামাজিক নেটওয়ার্কে আসক্তি পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর কেন?

উত্তর : মানুষ সামাজিক প্রাণী। এ কারণে মানুষের নিজেদের ভেতর সবসময়েই এক ধরনের সামাজিক যোগাযোগ ছিল। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ বলতে মানব সভ্যতার সেই চিরন্তন সামাজিক যোগাযোগকে না বুঝিয়ে ইন্টারনেট নির্ভর সম্পূর্ণ নতুন এক ধরনের নেটওয়ার্ক বোঝায়। ফেসবুক, টুইটার, গুগলপ্লাস এ ধরনের অনেক সামাজিক যোগাযোগ সাইট রয়েছে যেগুলোতে মানুষ নিজেদের পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ রাখতে পারে। এ সাইটগুলো শুধু যে একে অন্যের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করে তা নয়, এটি বিশেষ আদর্শ বা মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করার জন্যও ব্যবহার করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এ কথা সত্য, সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্তি ধীরে ধীরে পৃথিবীর জন্য একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে। কারণ, গবেষণাতে দেখা গেছে এই সাইটগুলোর সাফল্য নির্ভর করে সেগুলো কত দক্ষতার সাথে ব্যবহারকরীদের আসক্ত করতে পারে তার ওপর। পুরো কর্মপদ্ধতির মাঝেই যে বিষয়টি রয়েছে সেটি হচ্ছে কত বেশিবার এবং কত বেশি সময় একজনকে এই সাইটগুলোতে টেনে আনা যায় এবং তাদের দিয়ে কোনো একটা কিছু করানো যায়। কাজেই কেউ যদি অত্যন্ত সতর্ক না থকে তাহলে তার এ সাইটগুলোতে আসক্ত হয়ে যাওয়ার খুব বড় একটা আশঙ্কা রয়েছে। মনোবিজ্ঞানীরা এই সাইটগুলো বিশ্লেষণ করে আবিষ্কার করেছেন যে, সব মানুষের ভেতরেই নিজেকে প্রকাশ করার একটা ব্যাপার রয়েছে কিংবা নিজেকে নিয়ে মুগ্ধ থাকার এক ধরনের সুপ্ত আকাক্সক্ষা রয়েছে। সামাজিক সাইটগুলো তাদের এই সুপ্ত আকাক্সক্ষাকে জাগ্রত করে দেয়। তখন সবার ভেতরই নিজেকে জনপ্রিয় করে তোলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। জেনে হোক না জেনে হোক ব্যবহারকারীরা নিজের সম্পর্কে অত্যন্ত তুচ্ছ খুঁটিনাটি তথ্য সবার সামনে উপস্থাপন করতে থাকে, কেউ সেটি দেখলে সে খুশি হয়, কেউ পছন্দ করলে আরও বেশি খুশি হয়। পুরো প্রক্রিয়াটি অনেকটা মাদকের মতো কাজ করে এবং একজন ব্যবহারকারী ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের সময় অপচয় করতে থাকে। সামাজিক যেগাযোগের এই আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তার কারণে সারা পৃথিবীতে অনেক সময়ের অপচয় হচ্ছে, যা পৃথিবীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

প্রশ্ন ॥ ১৮ ॥ কম্পিউটার গেমে আসক্তি থেকে কীভাবে মুক্ত থাকা যায়? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কম্পিউটার গেম এক ধরনের বিনোদন। তাই অন্য যেকোনো বিনোদনের জন্য যেটা সত্য কম্পিউটার গেমের বেলায়ও তা সত্য। কমিম্পউটার এক ধরনের প্রযুক্তি। এ কারণে অনেকেই মনে করে কম্পিউটার গেম খেললে কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান হয়, যা মোটেও সত্য নয়। কম্পিউটার গেম খেললে শুধু খেলার আনন্দটাই পাওয়া যায়। এ কারণে মাদকে আসক্তির জন্য যা যা সত্যি, কম্পিউটার গেমে আসক্তির জন্যও সেগুলো সত্য। তাই কম্পিউটার গেমে একবার আসক্ত হয়ে সেখান থেকে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমানের কাজ হলো কখনই আসক্ত না হওয়া। যারা এই আসক্তির ব্যাপারটি জানে না তাদের পক্ষে আসক্ত হয়ে যাবার একটা আশঙ্কা থাকে। এ কারণে কেউ যদি কোনোভাবে একবার কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যায় এবং সেখান থেকে সে মুক্ত হতে চায় তাহলে তাকে সবার আগে নিজের কাছে স্বীকার করে নিতে হবে যে তার আসক্তি জন্মেছে। তারপর তাকে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী কী তার একটা তালিকা করতে হবে। সেই তালিকায় কম্পিউটার গেমের জায়গাটুকু কোথায় সেটি নিজেকে বোঝাতে হবে। তার জীবনের সমস্যাগুলোরও একটা তালিকা করতে হবে। সেই তালিকার সমস্যাগুলোর কোনো কোনোটি কম্পিউটার গেমের কারণে হয়েছে সেটাও নিজেকে বোঝাতে হবে। তারপর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ লেখাপড়া, হোমওয়ার্ক, মাঠে খেলাধুলা, Extra Curriculam Activities, পরিবারের সাথে সময় কাটানো, স্বেচ্ছাসেবকমূলক কাজে সবকিছুর জন্য সময় ভাগ করে রাখতে হবে। সবকিছু করার পর যদি কোনো সময় পাওয়া যায় তখনই কম্পিউটারের গেমস খেলা যাবে বলে ঠিক করে নিতে হবে। ধীরে ধীরে কম্পিউটারের সময় কমিয়ে এনে নিজেকে অন্যান্য সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ১৯ ॥ সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্তি থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়সমূহ বর্ণনা কর।

উত্তর : আমরা এখন ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাসসহ বিভিন্ন সামাজিক সাইটে পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারি। যোগাযোগের ক্ষেত্রে এসব সাইট ব্যবহার করা অর্থ, সময় এবং শ্রম সাশ্রয়ী। কিন্তু কিছু কিছু ব্যবহারকারী এসব সাইটে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় করেন বলে এসব সাইটে আসক্তি ধীরে ধীরে পৃথিবীর জন্য বড় ধরনের সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই আমরা যারা এসব সামাজিক সাইট ব্যবহার করি তাদের বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কোনোভাবেই আসক্তি না জন্মায়। কিন্তু ইতোমধ্যেই যাদের সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্তি জন্মেছে তা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য প্রথমেই তাদের নিজেকে বোঝাতে হবে এই ধরনের সাইটে অতিরিক্ত সময় দেওয়া আসলে এক ধরনের আসক্তি। প্রত্যেকবার যখন সামাজিক যোগাযোগ সাইটে কিছু একটা দেখতে ইচ্ছা করবে তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে সত্যি কি তার প্রয়োজন আছে? যদি প্রয়োজন না থাকে তাহলে নিজেকে নিবৃত্ত করতে হবে। প্রত্যেকবার যোগাযোগ সাইটে ঢুকলে সেখানে কতটুকু সময় দেওয়া হয়েছে সেটা কোথাও লিখে রাখতে হবে। দিনে কত ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়, সপ্তাহে কত ঘণ্টা, মাসে কত ঘণ্টা সেটা হিসাব করে সেই সময়টাতে সত্যিকারের কোনো কাজ করলে কতটুকু কাজ করা যেত সেটা নিজেকে বোঝাতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্তি কমাতে হলে সেখান থেকে যোগাযোগের প্রয়োজন নেই এমন মানুষদের কাটছাঁট করে সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। অন্য সব কাজ শেষ হওয়ার পর সময় থাকলেই এই সাইটে ঢোকা যাবে এটি নিজেকে বোঝাতে হবে। পরীক্ষা কিংবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের সাথে সামাজিক যোগাযোগ সাইট Deactivate করে ফেলার অভ্যাস করতে হবে। এভাবে ধীরে ধীরে নিজেকে অভ্যস্ত করে আসক্তিটুকু কমাতে কমাতে এক সময় পূর্ণভাবে মুক্ত হতে হবে।

প্রশ্ন ॥ ২০ ॥ পাইরেসি বলতে কী বোঝায়? এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখ।

উত্তর : পাইরেসি : লেখক, শিল্পীসহ সৃজনশীল কর্মীদের তাদের নিজেদের সৃষ্টকর্মকে সংরক্ষণ করার অধিকার দেওয়া কপিরাইট আইনের লক্ষ্য। সাধারণভাবে, একটি মুদ্রিত পুস্তকের কপিরাইট ভঙ্গ করে সেটি পুনর্মুদ্রণ করা যথেষ্ট ঝঞ্ঝাটপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল। কিন্তু কম্পিউটারের বেলায় যেকোনো কিছুর ‘কপি’ বা ‘অবিকল প্রতিলিপি’ তৈরি করা খুবই সহজ কাজ। এজন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। এ কারণে কম্পিউটার সফটওয়্যার, কম্পিউটারে করা সৃজনশীল কর্ম যেমন : ছবি, এনিমেশন ইত্যাদির বেলায় কপিরাইট সংরক্ষণ করার জন্য বাড়তি ব্যবস্থা নিতে হয়। যখনই এরূপ কপিরাইট আইনের আওতায় কোনো কপিরাইট হোল্ডারের অধিকার ক্ষুণ্ন হয় তখনই কপিরাইট বিঘ্নিত হয়েছে বলে ধরে দেওয়া যায়। এই ধরনের ঘটনাকে সাধারণভাবে পাইরেসি বা সফটওয়্যার পাইরেসি নামে অভিহিত করা হয়।

পাইরেসির প্রতিরোধ ব্যবস্থা : কপিরাইট আইনের আওতায় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা, নির্মাতা বা প্রোগ্রামার তাদের কম্পিউটার সফটওয়্যারের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ করতে পারেন। ফলে, তাদের অনুমতি ব্যতীত ওই সফটওয়্যারের প্রতিলিপি করা বা সেটির পরিমার্জনা করে নতুন কিছু সৃষ্টি করা আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ হয়ে যায়। ফলে, কপি বা নতুন সৃষ্টির আইনগত ভিত্তি আর থাকে না। কম্পিউটার সফটওয়্যারের পাইরেসি সোজা হলেও বিশ্বব্যাপী পাইরেসির প্রকোপ খুব বেশি- একথা বলা যায় না। বড় বড় সফটওয়্যার কোম্পানিগুলো তাদের মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ ও বিশ্বব্যাপী পাইরেসি নজরদারি করার জন্য বিজনেস সফটওয়্যার এলায়েন্স (BSA) নামে একটি সংস্থা তৈরি করেছে। সংস্থাটির ২০১১ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- পার্সোনাল কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনই পাইরেসিমুক্ত। যেহেতু সফটওয়্যার পাইরেসি খুবই সহজ, তাই এর হিসাব করাটা কঠিনই বটে। বাংলাদেশেও সফটওয়্যার পাইরেসি নিষিদ্ধ।

প্রশ্ন ॥ ২১ ॥ কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কপিরাইট আইন সৃজনশীল কর্মের স্রষ্টাকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তার সৃষ্টকর্মের ওপর ‘মালিকানা’ বা স্বত্বাধিকার দেয়। ফলে, কোনো সৃষ্টকর্মের বাণিজ্যিক মূল্য থাকলে সেটি তার স্রষ্টাই পান, অন্যরা নন। যেহেতু, প্রত্যেক মানুষের বেঁচে থাকার জন্য অর্থ প্রয়োজন, সেহেতু কবি, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র নির্মাতা, সফটওয়্যার নির্মাতা, ওয়েবসাইট ডিজাইনকারী সবারই টাকার প্রয়োজন। তারা তাদের সৃজনশীল কর্ম সৃষ্টির জন্য পরিশ্রম, মেধা এবং কখনো কখনো অর্থও বিনিয়োগ করেন। কাজেই, সৃষ্টকর্ম বিক্রি বা বিনিময়ের মাধ্যমে তাঁকে তার বিনিয়োগের সুফল তুলতে দেওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকেই। কপিরাইট আইনের আওতায় প্রাপ্ত আইনগত অধিকার তাদের সেই সুবিধাই দেয়। যদি কোনো শিল্পী বা প্রোগ্রামার দেখতে পান, তার দীর্ঘদিনের শ্রম ও মেধার ফসল অন্যরা কোনোরূপ স্বীকৃতি বা বিনিময় মূল্য ছাড়া উপভোগ বা ব্যবহার করছে তাহলে তিনি নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন। কপিরাইট আইনের কার্যকারিতা সৃজনশীল কর্মীদের এই নিরুৎসাহিত হওয়া থেকে রক্ষা করে। তাই বলা যায়, সৃজনশীলতার এই যুগে সৃজনশীল কর্মের উন্নয়নে কপিরাইট আইনের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

প্রশ্ন ॥ ২২ ॥ তথ্য অধিকার আইন সম্পর্কে লেখ।

উত্তর : তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্য অধিকার আইন প্রণীত ও বাস্তবায়িত হচ্ছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে চিন্তা, বিবেক ও বাক্স্বাধীনতা নাগরিকগণের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত এবং তথ্য প্রাপ্তির অধিকার চিন্তা, বিবেক ও বাক্স্বাধীনতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেহেতু জনগণ প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক সেহেতু জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশ তথ্য অধিকার ২০০৯’ নামে একটি আইন চালু হয়েছে। এই আইনের আওতায় কর্তৃপক্ষের নিকট হতে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্য লাভের অধিকার রয়েছে এবং কোনো নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকেন। এই আইনের মূল প্রতিপাদ্য হলো জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা হলে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা এবং সরকারি ও বিদেশি অর্থায়নে সৃষ্ট বা পরিচালিত বেসরকারি সংস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বৃদ্ধি, দুর্নীতি হ্রাস ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। এই আইনে কেবল তথ্য অধিকারকে নিশ্চিত করা হয়নি বরং একই সঙ্গে জনগণের তথ্য অধিকার যাতে নিশ্চিত হয় সেজন্য সংস্থাসমূহকে তথ্য সংরক্ষণ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ফলে জনগণের যেকোনো বিষয়ে তথ্য প্রাপ্তি সহজ হয়েছে।

এই আইনের ফলে অনেকের পক্ষে রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে যেসব তথ্যের গোপনীয়তার সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত,  সেসব ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য প্রকাশকে বাধ্যতামূলক রাখা হয়নি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যদি কোনো তথ্য প্রকাশ করা হলে দেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হয়, তাহলে তা এ আইনের আওতায় প্রকাশযোগ্য নয়।

প্রশ্ন ॥ ২৩ ॥ তথ্য অধিকার আইনে কোন ধরনের তথ্য প্রকাশকে বাধ্যতামূলক করা হয়নি? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তথ্য অধিকার আইন প্রণীত ও বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই আইনের আওতায় কোনো নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য থাকেন। এ কারণে অনেকেই মনে করেন তথ্য আইনের ফলে তাদের পক্ষে রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতক্ষে যেসব তথ্যের গোপনীয়তার সঙ্গে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত, সে সব ক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইনের আওতায় তথ্য প্রকাশকে বাধ্যতামূলক রাখা হয়নি। যেমন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। পরীক্ষার আগেই প্রশ্নপত্র প্রকাশের জন্য কোনো সংস্থাকে এই আইনের আওতায় বাধ্য করা হলে তা সম্পূর্ণ পরীক্ষাপদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, যা কাক্সিক্ষত নয়। এ কারণে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা তথ্য অধিকার আইন সংরক্ষণ করে। একইভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু কৌশলগত, কারিগরি বা বৈজ্ঞানিক তথ্য প্রকাশিত হলে প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে সেসব তথ্য গোপন রাখাটা এই আইনের লঙ্ঘন নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যদি কোনো তথ্য প্রকাশ করা হলে দেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি সৃষ্টি হয়, তাহলে তা এ আইনের আওতায় প্রকাশযোগ্য নয়।

প্রশ্ন ॥ ২৪ ॥ তথ্য আইনের আওতামুক্ত যেকোনো পাঁচটি বিষয় উল্লেখ কর।

উত্তর : জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০০৯ সালে ‘বাংলাদেশে তথ্য অধিকার ২০০৯’ নামে একটি আইন চালু হয়েছে। এই আইনের ফলে অনেকের পক্ষে রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে  রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্য এই আইন অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে সংরক্ষণ করে। এই আইনে ৭ম ধারায় ২০টি বিষয়কে এই আইনের আওতামুক্ত রাখা হয়েছে। সেখান থেকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিচে উল্লেখ করা হলো :

১. কোনো তথ্য প্রকাশের ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি হইতে পারে এইরূপ তথ্য;

২. পররাষ্ট্রনীতির কোনো বিষয় যাহার দ্বারা বিদেশি রাষ্ট্রের অথবা আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা বা আঞ্চলিক কোনো জোট বা সংগঠনের সহিত বিদ্যমান সম্পর্ক ক্ষুণ্ন হইতে পারে এইরূপ তথ্য;

৩. কোনো তথ্য প্রকাশের ফলে কোনো তৃতীয় পক্ষের বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হইতে পারে এইরূপ বাণিজ্যিক বা ব্যবসায়িক অন্তর্নিহিত গোপনীয়তা বিষয়ক, কপিরাইট বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ সম্পর্কিত তথ্য;

৪. কোনো তথ্য প্রকাশের ফলে প্রচারিত আইনের প্রয়োগ বাধাগ্রস্ত হইতে পারে বা অপরাধ বৃদ্ধি পাইতে পারে এইরূপ তথ্য;

৫. কোনো তথ্য প্রকাশের ফলে জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হইতে পারে বা বিচারাধীন মামলার সুষ্ঠু বিচার কার্য ব্যাহত হইতে পারে এইরূপ তথ্য;

প্রশ্ন ॥ ২৫ ॥ ট্রাবলশুটিং কী? যেকোনো দুইটি ট্রাবলশুটিংয়ের বর্ণনা দাও।

উত্তর : ট্রাবলশুটিং : ট্রাবলশুটিং হচ্ছে সমস্যার উৎস বা উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ের প্রক্রিয়া। সাধারণত কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয় এবং পাশাপাশি সমাধান দেওয়া থাকে। ব্যবহারকারী তার সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী সমাধান অনুসরণের মাধ্যমে বেশিরভাগক্ষেত্রে সমস্যাটি সমাধান করতে পারে।

ট্রাবলশুটিংয়ের বর্ণনা : ট্রাবলশুটিং কথাটি সাধারণত হার্ডওয়্যার সম্পর্কিত সমস্যার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নিচে দুটি ট্রাবলশুটিংয়ের বর্ণনা দেওয়া হলো :

ক্রমিক

সমস্যা

সাধারণ সমাধান

সিস্টেম চালু হচ্ছে না

১. মেইন পাওয়ার ক্যাবলের সংযোগটি ষড়ড়ংব বা ঢিলে কিনা দেখা।

২. মেইন বোর্ডে পাওয়ার আসছে কিনা দেখা।

৩. মেইন বোর্ডে যদি পাওয়া না আসে পাওয়ার সাপ্লাই ইউনিট পরিবর্তন করতে হবে।

৪. স্থানীয় কোনো সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে অভিজ্ঞ কাউকে দেখাতে হবে।

মনিটরের পাওয়ার অন/চালু কিন্তু পর্দায় কোনো ছবি নাই।

১. নিশ্চিত হতে হবে যে মনিটরের সাথে সরবরাহকৃত ভিডিও ক্যাবলটি কম্পিউটারের পেছনে মজবুতভাবে লাগানো হয়েছে। যদি ভিডিও ক্যাবলের অপর প্রান্তটি স্থায়ীভাবে মনিটরের সাথে যুক্ত না থাকে, তাহলে এটিকে দৃঢ়ভাবে লাগিয়ে  দিতে হবে।

২. ব্রাইটনেস এবং কনট্রাস্ট ঠিক করে দেখতে হবে।

 

প্রশ্ন-২৬ ॥ তোমার এক বন্ধু প্রায়ই কম্পিউটারে গেমস খেলে। এতে তার কী কী ক্ষতি হতে পারে? ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : কম্পিউটার গেমস এক ধরনের বিনোদন। কিন্তু এটি যখন মাত্রা অতিরিক্ত খেলা হয় তখন এটি আর বিনোদন থাকে না, তখন এটি আসক্তিতে পরিণত হয়। আর এই আসক্তি মাদকে আসক্তির মতোই ক্ষতিকর। আমার বন্ধুটি প্রায়ই কম্পিউটারে গেমস খেলে। এ থেকে বোঝা যায়, তার কম্পিউটারের গেমসের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়েছে। এ আসক্তির কারণে তার যেসব ক্ষতি হতে পারে তা নিচে ব্যাখ্যা করা হলো :

১. তার মাথায় সার্বক্ষণিক শুধু গেমসের ভাবনাই খেলা করে, যখনই সে গেমটি খেলতে বসে তখন তার ভেতরে এক ধরনের অস্বাভাবিক উত্তেজনা ভর করে। ফলে সে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে।

২. অত্যধিক মাত্রায় কম্পিউটারে গেমস খেলার কারণে তার সময় অপচয় হবে। ফলে দৈনন্দিন কাজকর্ম সে ঠিকভাবে করতে পারবে না।

৩. লেখাপড়ায় সে অমনোযোগী হয়ে উঠবে। কারণ, সবসময় তার মনোযোগ থাকবে কম্পিউটারের গেমসের দিকে। এছাড়াও কম্পিউটারে অত্যধিক গেমস খেলার কারণে তার মানসিক অস্থিরতা তৈরি হবে, যা লেখাপড়ায় তাকে অমনোযোগী করে তুলবে।

৪. জোর করে তাকে গেমস খেলা থেকে বিরত রাখলে তার শারীরিক অস্বস্তি বাড়তে থাকবে। অনেক কষ্ট করে তাকে এ আসক্তি থেকে মুক্ত করা সম্ভব হলেও পরে তা আবারও ফিরে আসতে পারে।

৫. দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকার কারণে তার চোখ, মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে সমস্যা হতে পারে।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলতে পারি, কম্পিউটার গেমস এক ধরনের বিনোদন হলেও অতিরিক্ত খেলার ফলে মানসিক ও শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয়। যা দৈনন্দিন কাজকর্মের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

প্রশ্ন-২৭ ॥ কম্পিউটারের সাধারণ ট্রাবলশুটিং জেনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ -উক্তিটি যুক্তিসহ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ‘কম্পিউটারের সাধারণ ট্রাবলশুটিং জেনে  রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ উক্তিটি যুক্তিসহ নিচে ব্যাখ্যা করা হলো :

কম্পিউটারের সাধারণ ট্রাবলশুটিং হচ্ছে কম্পিউটারের সমস্যার উৎস বা উৎপত্তিস্থল নির্ণয়ের প্রক্রিয়া। এতে সাধারণত কিছু প্রশ্ন উপস্থাপন করা হয় এবং পাশাপাশি সমাধান দেওয়া থাকে। ব্যবহারকারী তার সমস্যার প্রকৃতি অনুযায়ী সমাধান অনুসরণের মাধ্যমে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যাটি সমাধান করতে পারে।

অন্য যেকোনো ইলেকট্রনিক যন্ত্রের তুলনায় কম্পিউটারের ট্রাবলশুটিং একটু বেশিই প্রয়োজন হয়। এর কারণ বর্তমানে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। কম্পিউটার ছাড়া বর্তমানে কোনো কাজ কল্পনা করা যায় না। তাই এত প্রয়োজনীয় যন্ত্রটি যাতে ছোটখাটো সমস্যায় বন্ধ হয়ে না থাকে সেজন্যই কম্পিউটারের সাধারণ ট্রাবলশুটিং জেনে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

Pages